মল্লিকা, তুমি ভাল থেকো

ভালবাসি তোমায় (ফেব্রুয়ারী ২০১৪)

শফিক আলম
  • ৮৫
ব্যাপারটা অনুভূতিতে চমৎকার সন্দেহ নেই। রোমাঞ্চকর তো বটেই। কিন্তু কল্পনাকে যেন হার মানায়। এও কি সম্ভব! এমনও কি হয়? ঠিক আছে, হতে পারে হয় তো। মানুষের মনতো, কত বৈচিত্রে ভরা। কিন্তু সবকিছুরই একটা সময় থাকে, অবস্থাগত সময়। নাকি সময়ও এ ক্ষেত্রে হার মেনে যায়! কত কিছুই যেন লুকিয়ে থাকে জিবনের বিস্তৃত সীমানায়। মানব-মানবীর কতটুকু আর জানা যায়। যেমন আজ যদি ব্যাপারটা এভাবে প্রকাশ না পেতো, তা'হলে ধরে নেয়া যায় হয়তো অনুভূতিতে রোমাঞ্চকর এক অবিশ্বাস্য প্রেম কাহিনী পাথরচাপা পড়ে থাকতো অনন্তকাল।
ফোন্টা রেখে শাহেদ আসন ছেড়ে জানালাটার পাশে দাঁড়িয়ে এই কথাগুলো ভাবছিল। মল্লিকার ফোন ছিল। মল্লিকা প্যাটেল, ভারতীয় নারী জাম্বিয়াতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। যেমন আরও অনেক ভারতীয় বসবাস করছে। এখানে অভিবাসন পাওয়া অনেক ভারতীয়দের দেখা যাবে যাদের বেশীর ভাগই গুজরাট থেকে আসা। মল্লিকাও গুজরাটী। মল্লিকার সঙ্গে শাহেদের পরিচয় আজ থেকে পাঁচ বছর আগে। আসলে পরিচয়টা মল্লিকার সঙ্গে একা নয়, ওর স্বামীর সঙ্গেও। ওদের অডিও-ভিডিওর ব্যবসা। বিক্রি এবং ভাড়া দু'টোই। প্রথমে ছিল অডিও-ভিডিও ক্যাসেটের, এখন সিডি ডিভিডির। পাশাপাশি রেডিমেড গার্মেন্ট্সের। দোকানটা ইংরেজী 'এল' প্যাটার্নের। এল-এর আনুভূমিক অংশটায় মেয়েদের পোশাকের ডিসপ্লে। দোকানটা একেবারে ছোট নয়।
শাহেদ এখানে এসেছে চুক্তিভিত্তিক চাকরী নিয়ে। বিদেশী কোম্পানীতে প্রশাসনিক কোঅর্ডিনেটর। আফ্রিকার প্রায় সব দেশেই এই রকম বাইরের লোকজন চাকরী নিয়ে বসবাস করে থাকে। চাকরীর সুবিধাও মন্দ নয়। বাড়ি-গাড়ি সবই পাওয়া যায়। শাহেদও আছে গত আট বছর ধরে স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে। বাংলাদেশ থেকেই এসেছে দু'টোকে নিয়ে, আর ছোট মেয়েটার জন্ম হয়েছে জাম্বিয়াতেই। তাকে কি জন্মসুত্রে আফ্রিকান বলা হবে! এটা নিয়ে বেশ গবেষনা হয়েছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। শাহেদ মনে মনে হেসেছে, ওর মেয়েকে বলা হবে আফ্রিকান!
আফ্রিকাতে অবসরে ঘরে বসে ভিডিওতে ছবি দেখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বললেই চলে। যদিও ছুটি পেলেই আউটিং-এ যাওয়া যায়, বিভিন্ন রিসোর্ট অথবা সাফারিতে। সেটা আবার ব্যয়সাপেক্ষ। এই ভিডিও ভাড়া বা কিনতে যেয়েই পরিচয় ওদের সঙ্গে। মিঃ প্যাটেল মানুষটা ভাল। হাসিখুশি। দেখলেই জাগ্জিৎ সিং-এর কথা মনে পড়ে। চেহারাটা সেই আদলের। আর তার স্ত্রী মল্লিকাও তেমনি ভদ্র, মিশুক। সুন্দরী, টানা টানা চোখ দু'টো কথা বলে। শাহেদও সুদর্শন, কথা বলে সুন্দর করে। কথার মাঝে রসিকতা করতে পারে। সহজেই মিশতে পারে না, কিন্তু নিজের বৈশিষ্টের সঙ্গে মিলে গেলে ভাব জমাতে সময় লাগেনা। ভিডিও আনতে যেয়ে দু'জনের সঙ্গেই কথা হয়। পরিচয়ের ক'দিন পর থেকেই ওদের কাছে শাহেদের আসা-যাওয়াটা কি কারনে যেন অন্যান্য সদস্যদের চেয়ে সহজ হয়ে যায়। সদস্য কার্ড রেজিস্ট্রি করতে হয়, শাহেদও করেছে। তারপরও যেন অন্যরকম। বাংলাদেশী বলেই হয়তো। ভিডিও ক্যাসেট আনতে যেয়ে মাঝে মাঝে দেখা যায় মিঃ প্যাটেল বাইরে গেছে অন্য কোনও কাজে, আরও কিছু ব্যবসাও আছে নিশ্চয়ই। এখানে ভারতীয়দের তাই থাকে, নইলে চলবে কি করে। যে কারনে মল্লিকার সঙ্গেই কথা হতো। নিজে থেকেই বলে দিতো কোন ছবিটা ভাল বা মন্দ। কিন্তু অন্যদের বেলা্য় তা নয়। তাদের বিক্রি হওয়াটাই জরুরী। প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে একদিন তো আসতেই হয়, উইক এন্ড-এ। ভাল ছবি এলে কাজের দিনেও ওদিক দিয়ে আসতে যেয়ে ঢু মেরে আসে, ছবি পাওয়া গেলে নিয়েও আসে।
মাঝে শাহেদ বদলি হয়ে চলে গিয়েছিল অন্য শহরে। প্রায় তিন বছর থেকে কিছুদিন হলো ফিরে এসেছে আবার রাজধানি শহরে। আবার শুরু হয়েছে সেই মল্লিকাদের দোকানে আসা যাওয়া। কিন্তু এবার যেন আরেকটু অন্যরকম। শাহেদ লক্ষ্য করেছিল ওকে দেখেই মল্লিকার মুখটা বিস্ময় আর আনন্দে ভরে উঠেছিল। নিজ থেকেই জিজ্ঞেস করেছিল, এতদিন ছিলেন কোথায়? আমিতো ভেবেছিলাম চলেই গিয়েছেন বোধ হয়।
শাহেদ হেসে বলেছিল, চলে যাবো মানে? কোথায়?
কেন, আপনার দেশে। যারা চাকরী করতে আসে তারা এক সময় চলে যায় চুক্তি না বাড়িয়ে।
কথা যা হবার তা ইংরেজী অথবা হিন্দীতেই বলতে হয়। শাহেদ বলার মতো হিন্দী জানলেও আরষ্টতার কারনে ইংরেজীতেই বলে।
শাহেদ বললো, না, এখনও চলে যাওয়ার কথা ভাবিনি। বদলি হয়ে গিয়েছিলাম, ফিরে এলাম আবার।
যাক, তা'হলে এখন থেকে দেখা পাওয়া যাবে আপনার।
নিশ্চয়ই, না এসে উপায় আছে? আপনিই তো বাঁচিয়ে রাখেন। শাহেদ একটু রসিকতা করলো।
মানে? মল্লিকা কিছু না বুঝে বললো।
মানে আপনার ভিডিওগুলো না থাকলে সময় কাটানো কঠিন ছিল।
মল্লিকা এবার হাসলো।
ইদানিং ডিভিডি'র ডিমান্ড বেড়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝেই এরকম হচ্ছে, শাহেদ নতুন কোন ছবি আনতে গিয়েছে কিন্তু কেউ না কেউ নিয়ে গিয়েছে অথবা ফেরত আসেনি। শাহেদের হতাশা মল্লিকা লক্ষ্য করেছে হয়তো আর তাই একদিন দ্বিধা না করেই বললো, আমাকে আপনার ফোন নাম্বারটা দিন। কোন ছবি হাতে থাকলে অথবা নতুন কোন ভাল ছবি এলে আমি ফোন করে জানাবো।
শাহেদ একটু বিস্মিতই হলো এমন সৌজন্যের জন্য। বললো, তাহ'লে তো ভালই হয়। কিন্তু চটজলদি মাথার বুদ্ধি খরচ করে বাসার নাম্বার না দিয়ে অফিসের নাম্বারটা দিল। বাসায় কোন মহিলা ওকে চেয়ে ফোন করলে শেষে আবার কি হয়ে যায় কে জানে! অফিসের নাম্বারটা দেয়ার সময় মল্লিকাও একটা চিরকুট বাড়িয়ে দিয়ে বললো, এখানে আমার নাম্বার আছে, মানে এই দোকানের। আপনার যদি কোন কিছু বলার থাকে আমাকে জানিয়ে দেবেন।
শাহেদের ভিতরে হঠাৎ করেই যেন কি একটা নাড়া দিয়ে গেল।
দু'দিন বাদেই শাহেদ ফোন পেয়েছিল। শাহেদের অফিসে সবার রুমেই পিএবিএক্স এক্সটেনশান লাইন। অফিস সেক্রেটারী কৃষ্ণকায়া ক্যাথরিন লাইন দেয়ার আগে জিজ্ঞেস করেছিল, স্যার, ইয়োর কল।
হু ইজ ইট?
আ লেডি নেইম্ড মালিকা।
বুঝতে পারলো মল্লিকা। নড়ে চড়ে বসে শাহেদ বললো, ওকে, পুট হার থ্রু।
শাহেদ বললো, হ্যালো।
হ্যালো। এই প্রথম ফোনে মল্লিকার কন্ঠ শুনতে পেলো শাহেদ। যেন এক ষোড়ষী কথা বলছে। মিষ্টি, শান্ত এবং ক্ষীন।
হ্যা, কেমন আছেন? শাহেদ সহজ হতে চাইলো।
ভাল। আপনার জন্য কোন ছবি রাখবো এই উইক এন্ডে?
নিশ্চয়ই। যদি ভালো কিছু থাকে।
ঠিক আছে। কি করছেন? ব্যস্ত?
হ্যা, একটু ব্যস্ত তো থাকতেই হয়।
আচ্ছা, কাজ করুন। রাখছি।

সেই থেকে ফোনে কথা বলা শুরু মল্লিকার সঙ্গে। পরের সপ্তাহেই ফোন করেছে আবার। ফোন রাখবার সময় বলেছে, সময় হলে ফোন করতে পারেন। কথা বলা যাবে।
কেন, আপনি ব্যস্ত থাকেন না?
উইক ডে-তে সকালে তেমন একটা ব্যস্ততা থাকে না। মাঝে মাঝে বোরিং লাগে।
আচ্ছা, সময় পেলে ফোন করবো। শাহেদ ফোন রেখে ভেবেছে শাহেদের প্রতি মল্লিকার কি কোন দুর্বলতা আছে!
এরপর শাহেদ সময় করে ফোন করেছে, মল্লিকা খুব খুশি হয়েছে এবং বন্ধুত্বের কথা বলেছে মল্লিকা। যখন সবকিছু প্রায় সহজ হয়ে এসেছে, তখনই আজকের এই ব্যাপরটা ঘটলো।
মল্লিকাই ফোন করেছিল। বলেছে, আমরা কি 'তুমি' করে কথা বলতে পারি না?
শাহেদ বলেছে, উহু, তুমি করে বললে আমরা হয়তো আরো কাছে চলে আসবো।মনে হবে যেন আমরা প্রেম করছি।
আমরা প্রেম করছি না কি? তোমাকে তো আমি ভালই বাসি, বলিনি কখনো। মল্লিকা সরাসরি কত সহজেই কথাগুলো বললো। একবারে তুমি করে। আজ শাহেদ যেন বুঝতে পারছে সাহসী পুরুষেরা নয়, মেয়েরাই।
শাহেদ যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। কি বলছেন? সে আবার কবে থেকে?
গত পাঁচ বছর ধরে আমি তোমাকে ভালবেসে চলেছি। তুমি যখন প্রথম এসেছিলে তখন থেকেই। মল্লিকা থামলো।
কিন্তু শাহেদ আকাশ থেকে পড়লো। বললো, কিন্তু আমি তো কিছুই জানি না! এ কি করে সম্ভব?
মল্লিকা বলে, তোমাকে কিছুই বুঝতে দেই নি। এ কথা কি বলা যায়? সম্ভব-অসম্ভব বুঝি না, কিন্তু তোমাকে ভাল না বেসে কি পারা যায়?
শাহেদ বলে, কিন্তু এই ভালবাসার অর্থ কি?
মল্লিকা বলে, কোন অর্থ নেই। তোমাকেও আমি বলছি না যে তুমিও আমাকে ভালবাসবে। তুমি ছিলে না অনেক দিন। আমি কষ্ট পেয়েছি। ভেবেছিলাম তুমি চলে গিয়েছ। যেদিন তোমাকে আবার দেখলাম সেদিনের অনুভূতি তোমাকে বোঝাতে পারবো না। কিন্তু তারপরও জানি তুমি একদিন চলে যাবে। তারপরও তোমাকে ভালবাসি, ভালবসবো।
মল্লিকা সুন্দরী মেয়ে। ওর কথাবার্তা, ব্যবহার সবই আকর্ষনীয়। কিন্তু সেও তো একজন মা, দু'টো মেয়ে আছে দেখেছে একদিন ভিডিও শপে এসেছিল। বড়টা স্কুলের শেষ বর্ষে আছে। দু'দিন বাদে কলেজে উঠে যাবে। ছোটটা পঞ্চমে সম্ভতঃ। আর শাহেদের বড় ছেলে দু'দিন বাদে ‘এ’ লেভেল দেবে। ছোট দুই মেয়ে। অষ্টম আর তৃতীয় শ্রেনীতে পড়ছে। জমে যাওয়া সংসার, স্থিতিশীল। এর মধ্যে প্রেম আসে কোথা থেকে! কিন্তু একটা অন্য রকম অনুভূতি খেলেই যায় যেন শাহেদের মধ্যে। শাহেদ বিয়ে করেছে ঘটা করে, দেখে শুনে। আ্যারেন্জ্ড ম্যারেজ। প্রেম কাকে বলে সেটা অবশ্য বিয়ের আগে জানা হয় নি। সেটা হয়েছে বিয়ের পরে। স্ত্রীর সঙ্গে ভালই আছে, সুখে আছে।
ফোন রাখার সময় মল্লিকা অবশ্য বলেছিল, তুমি আবার আসা বন্ধ করে দিও না যেন!
ফোনটা রেখে শাহেদ জানালার ধারে এসে ভাবছে এই সব কথা। ওর কি একটু অহংকার বোধ হচ্ছে ভিতরে ভিতরে। সে তো একজন পুরুষ। কোন সুন্দরী নারী যদি এভাবে বলে 'তোমাকে কি ভাল না বেসে পারা যায়' তা'হলে কোন পুরুষকে না উন্নাসিক করে ছাড়ে? কি আছে ওর ভিতরে যা মল্লিকা খুঁজে পেলো আর সবকিছু ভুলে ভালবেসে ফেললো একেবারে চোখ বন্ধ করে। সেও আবার পাঁচ বছর ধরে নীরবে! সেই কবেকার কথা অথচ শাহেদের ভিতরে এমন কিছুই ছিল না। শাহেদ কি পারবে ওকে এখন ফিরিয়ে দিতে। কেমন অবোধ ভালবাসা মল্লিকার! কিন্তু শাহেদের ভিতরে একটু অন্যরকম অনুভূতি তৈরি হচ্ছে। সত্যিই মনে হচ্ছে আজ মল্লিকার ওখানে যাওয়া উচিত। মন চাইছে যেতে। হ্যা, যাবে। ফিরে এসে হাতের কাজগুলো শেষ করে ফেললো।
বিকেল পাঁচটায় গাড়ী নিয়ে বের হলো। অন্যদিন একটু দেরীই হয়ে যায় বেরুতে বেরুতে। নিজেই ড্রাইভ করছে। সকালে আসা আর বিকেলে ফিরে যাওয়াটা শাহেদ নিজেই ড্রাইভ করে। অফিসের কাজের সময় ড্রাইভার ব্যবহার করে। এই সময়টা রাশ আওয়ার। আজকাল লুসাকা শহরটাতেও জ্যাম পড়ে যায়। ৫ বছর আগেও এরকমটি ছিল না। ট্রাফিক বেড়ে গেছে অনেক। গ্রেট নর্থ রোডের ফ্লাইওভারটায় লম্বা লাইন পড়েছে। অবশ্য এখান থেকে ছুটে যেতে পারলেই কায়রো রোডের পিছনের রাস্তা ধরে ফ্রিডম ওয়েতে চলে যেতে পারবে। মল্লিকাদের দোকানটা ছিল আগে কায়রো রোডের উপর। গত দু'বছর হলো ফ্রিডম ওয়েতে চলে এসেছে। কায়রো রোড হচ্ছে লুসাকা শহরের হার্ট। শহরের অফিস পাড়া, বানিজ্যিক এলাকা আবার একদিকে দোকানপাটও। যে কারনে ঘর ভাড়া বেশি, খরচ বেশী।
শাহেদ গাড়ি পার্ক করে ঢুকলো। মল্লিকা মুখ নিচু করে কিছু একটা লিখছিলো। কেউ একজন এলো ভেবে মুখ তুললো। কিন্তু কিছুই বললো না। আজ কি ওকে অন্যরকম লাগছে। একটু অন্যরকম লাগতেই পারে। আজ যে ওর মনের সব কথা বলে দিয়েছে। শাহেদের সামনে তো আজ সে অন্য এক মল্লিকা। সামনের ডিসপ্লে বোর্ডটার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো শাহেদ।
মল্লিকা মুখ নিচু করেই বললো, কেমন আছ?
ভাল। তুমি?
ভাল।
এই কথাগুলো খুব স্বাভাবিক। প্রতিবার এলেই এই কথাগুলো দিয়ে শুরু হয়। কিন্তু এরপর কি বলা যায়!
কিছুক্ষন নিরবেই কাটলো। মল্লিকা এর ফাঁকে ফেরৎ আসা ডিভিডিগুলো জায়গা মতো রেখে নিলো। ভিতরে কোন কাস্টমার নেই। একটু দুরে এক কোনে আফ্রিকান এক মহিলা আ্যাটেন্ডান্ট বসে আছে।
নিরবতা ভেঙ্গে শাহেদ বললো, মল্লিকা তুমি পাগল হয়ে গেছ। কি করেছ এটা?
শাহেদ এবার 'তুমি' করেই শুরু করলো এবং হিন্দীতেই। কেন সে হয়তো নিজেই জানে না।
মল্লিকা কিছু বলে না। চুপ করেই থাকে।
আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু এরপর কি করবে? শাহেদ আবার বলে।
এবার মল্লিকা একটু হেসেই বলে, কি করবো আবার? তোমাকে ভালবেসে যাবো।
ওর মুখের দিকে তাকালে বিস্মিত হতে হয়। কেমন একটা করুনাও হয় শাহেদের। বলে, তুমি কষ্টই পাবে শুধু।
এবার মল্লিকা কথা ঘুরিয়ে বলে, তুমি এক কাজ কর..., বলে সে সেল্ফ থেকে একটা ডিভিডি টেনে বের করে আবার বলে, এই ছবিটা তুমি দেখ। ভাল লাগবে।
শাহেদ বলে, কি ছবি এটা?
'ম্যায়নে পেয়ার কারনে লাগা'।
নাম দেখে তো মনে হচ্ছে এর পরিচালিকা তুমিই। শাহেদ হাল ছেড়ে দিয়ে এবার একটু রসিকতা করে।
এর পর থেকে শাহেদ আর ঘাটায় নি মল্লিকাকে। বরং মল্লিকার ব্যবহারে সে-ই ওর দিকে ঝুঁকে যায়। ওর ভিতরে এক ধরনের দুর্বলতা তৈরি হতে থাকে। কিন্তু সে ভাবে এই ভালবাসা যদি প্লেটনিক হয় তবে ক্ষতি কি? সরে এসে মল্লিকাকে কষ্ট দিতে ওর নিজেরই কেমন এক ধরনের কষ্ট হয়।
সময় গড়িয়ে যায়, শাহেদের দোকানে আসা-যাওয়াটাও বেড়ে যায়। ফার্স্ট হাফে মানে সকালের দিকটাতে তেমন একটা কাস্টমার থাকে না। শাহেদ ঐ সময়টাতে যায়, গল্প করে এটা-সেটা। আর ওদের কাছে আসাটা বেড়ে যায়। মল্লিকা মাঝে মাঝে হিন্দীতে কথা বলে, শাহেদ আরষ্ট হয়ে একটু বলেই আবার ইংরেজিতে চলে যায়। মল্লিকা বলে, তুমি হিন্দীতে বল না কেন। তুমি তো হিন্দী পারো। শাহেদ বলে, তুমি বলছো, কিন্তু আমি জানি ভুল বলছি।
তুমি যতটুকু ভুল বলছো সেগুলো আমি শুধরে দেবো। আমার সঙ্গে কথা বল, দু'দিন পর দেখবে তুমি শাম্মী কাপুরের মত হিন্দি বলছো।
মানে? তুমি আর কাউকে পেলে না, ঐ ভোট্কা ব্যাটা শাম্মী কাপুরের সঙ্গে তুলনা করলে? শাহেদ উষ্মা দেখিয়ে বললো।
এই, তুমি শাম্মী কাপুরকে নিয়ে কিছু বলবে না। সে আমার প্রিয় নায়ক। মল্লিকা বললো।
শাহেদ শুনে তো হাসি থামাতে পারে না।
হি ইস নাও ব্লাডি ওল্ড ম্যান। ডু ইউ নো ?
জানি, কিন্তু আমি পুরনো ছবি দেখতে পছন্দ করি আর ওরটাই দেখি।
শাহেদ বললো, আজ বুঝলাম তোমার মাথায় সত্যি গন্ডগোল আছে।
এভাবেই গড়িয়ে যায় সময়। শাহেদও সত্যি সত্যিই হিন্দী বলাটা ভালই রপ্ত করে ফেলে। মল্লিকা অনেক সহজ করে দিয়েছে আর অনেক কঠিন শব্দের অর্থগুলো শিখে নিয়েছে। যেমন, কারবাট। মানে বিছানায় শোয়া অবস্থায় এপাশ-ওপাশ করা। অথবা 'মেহ্সুস' মানে অনুভব করা। কথা বলার মানুষ থাকলে যে অনেক কঠিন ভাষাও শিখে ফেলা যায় তা শাহেদ বুঝতে পারছে। এখন শাহেদ হিন্দীতেই কথা বলতে যেন স্বচ্ছন্দ বোধ করে। একদিন মল্লিকা মুখ নিচু করে কার্ডে এন্ট্রি করছিল, শাহেদ পাশে দাঁড়িয়ে ওর আঙ্গুলগুলো দেখছিল। হঠাৎ বললো, মল্লিকা, তোমার হাতটা একটু ছুঁয়ে দেখি?
মল্লিকা যেন একটু চম্কে উঠলো। পরক্ষনেই সামলে নিয়ে বললো, কিউ নেহি? ছোঁও না? শাহেদ হাত বাড়িয়ে ওর হাতটা ধরলো। মল্লিকা যেন কেঁপে উঠলো। আর শাহেদ নতুন এক ছোঁয়ার অনুভবে আলোড়িত হলো। ছেড়ে দিল খুব শীঘ্রই। কেউ দেখে ফেললে সর্বনাশ হয়ে যাবে। কাস্টমার যারা আসে তারা নিশ্চয়ই হাত ধরে কথা বলে না। এভাবে ওদের মাঝে দূরত্ব আরও কমে আসে।
আরেকদিনের কথা। শাহেদ গিয়েছে মল্লিকার ওখানে কিন্তু মল্লিকাকে দেখছে না। ঘরের কোনাটাতে বরাবরের মতো বেজার হয়ে বসে থাকা আফ্রিকান মেয়েটার কাছে জানতে চাইলো। মেয়েটা এতদিনে জেনে ফেলেছে এখানে শাহেদের বিশেষ কদর আছে। জবাব পাওয়ার আগেই শাহেদ শুনতে পেলো, আমি এখানে?
শাহেদ দেখলো পিছনটাতে যেখানে পোশাক সাজানো তার আড়াল থেকে কথা বলছে মল্লিকা। গোছগাছ করছে। শাহেদ দাঁড়িয়ে আছে দেখে মল্লিকা আবারো বলে, এখানে চলে এসো।
শাহেদ এগিয়ে যায়। এদিকটা নিরিবিলি, শুনশান। গোলাকার হ্যাংগারে রেডিমেড পোশাকগুলো সাজানো বলে ওদিক থেকে খুব একটা দেখাও যায় না।
মানব-মানবী এক হতে নেই, তাও যদি হয় আড়ালে। শাহেদ কাছে গিয়ে দাঁড়ালো আর চকিতেই মল্লিকা ওকে জড়িয়ে ধরলো।ক্ষীন কন্ঠে বললো, এভাবে একটু জড়িয়ে থাকতে দাও।
শাহেদ কেঁপে উঠলো। দু'হাতে ওর মুখখানি তুলে দেখলো কিছুক্ষন। তারপর আলতো করে চুমু খেলো ওর ঠোঁটে। খুব বেশিক্ষন নয়, কিন্তু মনে হলো যেন অনন্ত কাল। শাহেদ হঠাৎ যেন শুন্য থেকে মর্ত্যে এসে দাঁড়ালো। চকিতে ছাড়িয়ে নিল। কি করছে ও এসব! কেউ দেখে ফেললে ওর যাই হোক কিন্তু মল্লিকার কি হবে?
সেদিন মল্লিকার ওখান থেকে বের হয়ে শাহেদ এমনিই গাড়ি চালিয়ে এদিক ওদিক ঘুরলো। নিজের ভিতরে একটা তোলপাড় খেলে যাচ্ছে। ওর চোখের সামনে কেন বারবার ভেসে উঠছে ওর স্ত্রী শম্পার মুখটা! ওর আদরের মেয়ে দু'টোর মুখ, ছেলেটাও এসে দাঁড়া্য় যেন ওর পাশে। সে কি ফাঁকি দিচ্ছে ওদেরকে? এ যে প্রতারনা! কিন্তু সে তো চেয়েছিল প্লেটোনিক প্রেম, মল্লিকার সঙ্গে। যেখানে থাকবে না কোন শরীরী ভাষা, থাকবে না কোন শরীরের চাহিদা। আজ ফিরতে একটু রাত হয়ে যায়। শম্পা দরজা খুলে বলে, আজ দেরি করলে যে? শাহেদ শম্পাকে দেখে, একটু সময় নিয়েই। শম্পা আবার বলে, তোমার কি শরীর খারাপ? শাহেদ সামলে নেয়। বলে, না, একটু কাজ পড়ে গিয়েছিল।

শাওয়ার নিয়ে বের হতে যেয়ে মেয়ে টিংকুর ঘরটা চোখে পড়ে। টিংকু পড়ছে। কেন যেন একটু পাশে গিয়ে দাঁড়াতে ইচ্ছে করলো।
কি পড়ছো মা?
পড়ছি না। অংক করছি। আজ দেরী করলে কেন বাবা?
হ্যা, একটু দেরীই হয়ে গেছে। কাজ ছিল। পড়ো।
শাহেদ বেরিয়ে নিজের কামরায় চলে আসে। চা খেতে খেতে স্ত্রীকে বলে, একটা কথা বলতে চাই তোমাকে।
কি কথা?
খুবই জরুরী কথা।
দেখো প্রেমে ট্রেমে পড়ে থাকলে আমাকে বলার দরকার নেই। ওটা সহ্য করতে পারবো না। অন্য কিছু হলে নিশ্চিন্তে বলতে পারো।
শম্পা এই রকমই। ওরা প্রেম করে বিয়ে করেনি ঠিকই, কিন্তু বিয়ের পরে চুটিয়ে প্রেম করেছে। আর তাই হয়তো এত সহজিয়া কথাবার্তা।
কিন্তু শাহেদ চম্কে ওঠে। শম্পা কি জেনে ফেললো কিছু। তাই বা কি করে হয়।
শাহেদ সামলে নিয়ে বলে, কি যে বলো! আমি ভাবছি অনেক দিনতো দেশের বাইরে কাটালাম। এবার ফিরে যাই দেশে।
শম্পা তাকালো শাহেদের দিকে। বললো, হঠাৎ এ কথা বলছো যে? কোন সমস্যা হয়েছে?
না, কি সমস্যা হবে! তবে কাজের চাপটা এখানে একটু বেশীই। তা'ছাড়া দেশের বাইরে আর কতদিন থাকবো।
শম্পাও অনেকটা একঘেয়েমী জিবনে হাপিয়ে উঠেছে। সবাইকে ছেড়ে সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে পড়ে আছে। এখন চলে গেলে মন্দ হয় না।
মন্দ বলো নি। তুমি চাইলে চলে যাওয়া যায়। শম্পা সম্মতি দিল।
রাতে শুয়ে শাহেদ আজকের ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছিল। মল্লিকার জন্য খারাপ লাগছে। একটু কি ভালবাসেনি ওকে! বেসেছেই তো। কিন্তু একটা সর্বনাশ থেকে ওকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
কিছু দিন মল্লিকার ওখানে গেল না শাহেদ। মল্লিকা ফোন করে জানতে চাইলো শাহেদ রাগ করেছে কি না। শাহেদ বলেছে, রাগ করবো কেন? যা ঘটেছে তার অংশীদার তো আমরা দু'জনেই।
কয়েকদিন পর শাহেদ গিয়েছে মল্লিকার ওখানে। দু'জনেই যেন একটু আরষ্ট। শাহেদ বলে, মল্লিকা, আমরা মনে হয় একটু বেশিই এগুচ্ছি। নিজেদের শাসন না করতে পারলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। তোমার কথা ভেবেছো? কি হবে সে তো বুঝতেই পারছো।
কিছুক্ষন চুপ থেকে মল্লিকা সায় দেয়। বলে, আমারও তাই মনে হয়। এখন থেকে আমরা শুধু কথাই বলবো। ঠিক আছে?
শাহেদ জানে এই 'ঠিক আছে' আর ঠিক থাকবে না। এসব বলে কয়ে আসে না।

মিঃ প্যাটেল দোকান বন্ধ করছে। রাত ন'টায় দোকান বন্ধ করার সময়। মল্লিকা দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির কাছে। মিঃ প্যাটেলের অপেক্ষা করছে। একটা উড়োজাহাজ উড়ে গেল তেমন একটা উঁচুতে নয়, যেন একটু আগেই উড়াল দিয়েছে। জাহাজের আলোগুলো স্পষ্ট। লাল আলোটা টিপ টিপ জ্বলছে নিভছে। মল্লিকা উড়োজাহাজটার দিকে এক পলক তাকিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।
শাহেদ উড়োজাহাজের ভিতরে বসে আছে। জানালার ধারে বসেছে। অন্ধকারে কিছু দেখা না গেলেও শহরের আলোগুলো এখনও দেখা যাচ্ছে। নিচে তাকিয়ে যেন খোঁজার চেষ্টা করে মল্লিকাদের দোকানটা কোন দিকে। মল্লিকা এখন কি করছে! দোকান বন্ধ করে ঘরে ফিরে গিয়েছে নিশ্চয়ই। শাহেদ ঘড়ি দেখে। গতকালও মল্লিকার ওখানে গিয়েছিল। সহজাত কথা-বার্তা বলেছে। মল্লিকাকে একটুও বুঝতে দেয়নি যে শাহেদ কত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। কিন্তু মল্লিকাকে একবার বলেছিল, আচ্ছা মল্লিকা, আমি যদি হঠাৎ চলে যাই তো তুমি কি করবে?
চকিতে শাহেদের দিকে তাকিয়ে বলেছে, তুমি যাবে না আমি জানি।
শাহেদ আর কিছু বলেনি। এখন মল্লিকার জন্য খারাপ লাগছে। কাল বা পরশু শাহেদ ওর ওখানে না গেলে অফিসে ফোন করবে মল্লিকা। আর তখনি জেনে যাবে যে শাহেদ দেশে ফিরে গেছে। শুনে কি করবে মল্লিকা? কাঁদবে? রিসিভারটা হাত থেকে পড়ে যাবে? নাকি বিশ্বাস করবে না! ও কি আর দোকানে আসবে না? বসবে না আর কখনো? নাকি সবই চলবে, কেউ কিছু জানবে না। মল্লিকা যেমন মেয়ে হয়তো কাউকে কিছু জানতেই দেবে না। নিজের অবুঝ আর বাঁধ ভাঙা প্রেমটাকে নিজের ভিতরেই লালন করবে চোখের জলে।
শাহেদের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। মনে মনে বলে, মল্লিকা তোমার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। জেনেছি পাগলপারা প্রেম কাকে বলে। আমি কোন দিন তোমাকে ছেড়ে যাবো না এ কথাটা ঠিক নয়। এটা কেবলই তোমার এক অন্ধ বিশ্বাস। আমি তোমার এই বিশ্বাস রাখতে পারিনি। এই দেখো আমি চলে যাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করো। তুমি ভাল থেকো, মল্লিকা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ছন্দদীপ বেরা সুন্দর । ভাল লেখা । পড়লাম ।
তানি হক অসম্ভব রকম মনকাড়া গল্পটি ... আপনাকে ধন্যবাদ জানাই । আমার কবিতায় আমন্ত্রন রইল ।
ভালো লাগেনি ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ। সময় করতে পারিনা বলে সবারটা পড়া হয়ে ওঠে না। আপনি খুব ভাল লেখেন। মেস্ক আম্বার-প্রেম একটি চমৎকার কবিতা।
ভালো লাগেনি ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন মোহ আর আত্মসংযম.ভাল লিখেছেন। ভাল লাগেছে। শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
আল জাবিরী অসাধারণ.......................................
ভালো লাগেনি ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
জোহরা উম্মে হাসান খুব সুন্দর লাগলো.
ভালো লাগেনি ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
ভালো লাগেনি ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
শফিক আলম ধন্যবাদ. ভাল থাকবেন.
ভালো লাগেনি ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ওয়াহিদ মামুন লাভলু নে মনে বলে, মল্লিকা তোমার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। জেনেছি পাগলপারা প্রেম কাকে বলে। আমি কোন দিন তোমাকে ছেড়ে যাবো না এ কথাটা ঠিক নয়। এটা কেবলই তোমার এক অন্ধ বিশ্বাস। অনেক সুন্দর ভালবাসার দুঃখজনক গল্প। চোখ ছলছল করে ওঠে। খুব ভাল লাগল। শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

২৩ অক্টোবর - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ১৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪